প্রথমবারের মতো রাজশাহীর পদ্মার চরে চড়কপূজার আয়োজন করা হয়েছিল। গতকাল সোমবার বিকেলে নগরের আলুপট্টি ঘাটের নিচে চরের এই মেলায় ভক্তদের প্রচুর ভিড় হয়েছে। দূরদূরান্ত থেকে ভক্তরা মনের ইচ্ছা পূরণের আশায় মেলায় এসেছেন বলে জানান।
বেলা তিনটার থেকে আলুপট্টি ঘাট দিয়ে হাজার হাজার মানুষ এই চরে নামতে থাকেন। মেলায় পুরুষের চেয়ে নারী ভক্তদের ভিড় বেশি ছিল। চড়কগাছ ঘোরানোর আগেই নারী ভক্তরা গাছের কাছে গিয়ে ভক্তি জানাতে থাকেন। তার আগে পদ্ম সর্বজনীন শিবমন্দিরে পূজা–অর্চনা হয়। এরপর সন্ন্যাসীরা পদ্মার চরে নেমে আসেন। তাঁদের পেছনে পেছনে শত শত মানুষ ভিড় করে চরে নামেন। বিকেল পাঁচটার দিকে চড়কগাছ ঘোরানো শুরু হয়। এ সময় ভক্তরা উলুধ্বনি ও শঙ্খধ্বনি দিয়ে সন্ন্যাসীদের উৎসাহিত করেন।
পদ্ম সর্বজনীন শিবমন্দিরের ব্যানারে এই মেলার আয়োজন করেন বিশ্বজিৎ সরকার, অন্তর সরকার ও কাঞ্চন সরকার। বিশ্বজিৎ সরকার প্রথম আলোকে বলেন, রাজশাহী শহরে কখনো এই পূজা হয়নি। তাঁরা উদ্যোগ নিয়ে প্রথমবারের মতো এই আয়োজন করেছেন। তিনি আরও বলেন, ১৩ মে এই পূজা শুরু হয়েছে। এই চড়কগাছ ঘোরানোর পর পদ্মায় শিবের প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে পূজার সমাপ্তি ঘটবে। যাঁর যা মনবাসনা আছে, তা পূরণের আশায় ভক্তরা এখানে এসেছেন। শিব তাঁদের সেই বাসনা পূরণ করবেন বলে তাঁরা বিশ্বাস করেন।
রাজশাহী নগরের রানীনগর এলাকা থেকে এসেছিলেন দুলালী রানী (৬০)। তিনি বলেন, মনের বাসনা পূরণের জন্যই এখানে এসেছেন। নগরের নওদাপাড়া এলাকা থেকে এসেছিলেন জয়ন্তী রানী দাস (৫০)। তিনি বলেন, ‘দেখতে এসেছিলাম। আর কিছু জানি না। তবে রাতে উপবাস করেছি এই আরকি।’
নগরের মির্জাপুর এলাকা থেকে এসেছিলেন পূর্ণ চন্দ্র লাল দাস (৬৫)। তিনি বলেন, যাঁদের মানত আছে, তাঁরাই চড়কে ওঠেন। আর তাঁরা এসেছেন তাঁদের উৎসাহ দিতে। যেন তাঁরা কোনো ভয় না পান। তবে বেশির ভাগ মানুষ এসেছেন মেলা দেখতে।
জেলার চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছি এলাকা থেকে এসেছিলেন অশীতিপর বৃদ্ধ সুমিত্রা দাস। তিনি পড়েছিলেন হাজারো মানুষের ভিড়ে। তিনি বলেন, আনন্দলাভ হয়, পুণ্যলাভও হয়, তাই এসেছেন।
Post a Comment